অপরাধ

অস্রোপচারের পর অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু, চিকিৎসকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

  admin2 ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:২৮:১০ 53

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহে কিডনির পাথর অপারেশনের পর
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসকসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

শনিবার বিকেলে ২০ বছর বয়সী নিহত রেখা আক্তারের স্বামী মাহবুব আলম বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলাটি করেন।

আসামিরা হলেন- শহরের পেশেন্ট কেয়ার ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ৩৫ বছর বয়সী মো. রফিক মিয়া, ৩০ বছর বয়সী অমিত বাবু, ৪৫ বছর বয়সী ডা. মো. আশরাফুল হক মোল্লা, ৩১ বছর বয়সী ডা. আরিফ রব্বানী, ২৭ বছর বয়সী মেহেদী ও ৩০ বছর বয়সী মো. তারেক মিয়া।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ।

মামলার বরাত দিয়ে তিনি জানান, মামলার বাদী মাহবুব আলম জেলার ত্রিশাল উপজেলার আমিয়ান ডাঙ্গুরী গ্রামের মৃত সাইদুল ইসলামের ছেলে। তিনি নিহত রেখা আক্তারের স্বামী। রেখা আক্তার ১৩ সপ্তাহের যমজ সন্তানের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

সম্প্রতি রেখা আক্তার কিডনিতে ব্যথা অনুভব করেন। এমন অবস্থায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষা করে রেখা আক্তারের কিডনিতে পাথর ধরা পড়ে। এই ঘটনার পর ১৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পরিচিত মেহেদী হাসান শহরের চরপাড়ার ব্রাহ্মপল্লী এলাকার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিক মিয়া ও অমিত বাবুর সঙ্গে কিডনিতে পাথরের অপারেশন করার জন্য ৯৪ হাজার টাকা চুক্তি করেন। এর মাঝে ৫০ হাজার টাকা অগ্রিম দেন বাদী মাহবুব আলম। পরে রাত ১টার দিকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায় রেখাকে।

অপারেশন করে পোষ্ট অপারেটিভ রুমে রাখার ঘণ্টাখানেক পরেও রেখার জ্ঞান না ফিরলে তাঁর স্বজনরা কান্নাকাটি শুরু করেন। ক্লিনিকে কর্তব্যরত কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা জানান, রোগীর অ্যানেসথেসিয়া একটু সমস্যা হয়েছে তাই, এমন হচ্ছে।

পরে রাত ৩টার দিকে ডা. মো. আশরাফুল হক মোল্লা ও ডা. আরিফ রব্বানী ক্লিনিকে এসে অ্যাম্বুলেন্সে করে রেখা আক্তারকে জোরপূর্বক সদরের চুরখাই কমিউনিটি বেজড্ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

সেখান থেকে আবার পেশেন্ট কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাঁদের মেরে মরদেহ গুম করার হুমকি দেয়া হয়। পরে মরদেহ ক্লিনিকের সামনে রেখে বিচার দাবি করেন। পরে স্থানীয়রা ক্লিনিক ঘেরাও করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

ওসি বলেন, আসামিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা সিভিল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার রাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ডা. আব্দুল কুদ্দুসকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও খবর:

Sponsered content