admin2 ৭ এপ্রিল ২০২২ , ৪:৪২:৫১ 462
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
৩৬ ইঞ্চি উচ্চতার জিহাদ অংশগ্রহণ করেছিলেন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায়। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি ভর্তি হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সমাজের চোখে হাসির পাত্র হলেও সকল সমালোচনাকে উপড়ে ফেলে এগিয়ে চলেছেন অদ্যম গতিতে।
জিহাদের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া গ্রামে। পিতার নাম ফারুক হাসান গাজী। রাজধানীর মুসলিম মডার্ন একাডেমি থেকে জিপিএ ৪.৬৭ পেয়ে এসএসসি পাস এবং বনফুল আদিবাসী ক্যাডেট কলেজ থেকে জিপিএ ৪.২৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছেন জিহাদ।
এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বপ্নকে জয় করার একধাপ এগিয়ে নিতে ভর্তি হয়েছেন ইংরেজি বিভাগে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর অনুভূতি ব্যক্ত করে জিহাদ বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব। ভর্তি হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আল্লাহর রহমত আর পিতা-মাতার সহযোগীতায় সেটা সম্ভব হয়েছে। তবে মায়ের অবদান অনেক বেশী।
মা দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন। সর্বশেষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছি। আমার সপ্ন বিসিএস ক্যাডার হওয়া এবং মানুষের সেবা করা।’
জিহাদের মা রেহানা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে বিভিন্ন মানুষ নানা কথা বলেছে। এসব কথা শুনে অনেক সময় কষ্ট লেগেছে। তবে ওর চেষ্টা ও আগ্রহ দেখে আমি ওর সপ্নপূরণে সহযোগীতা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি ওর লাইফটা একটু ভাল মানের দিকে আগায় দিতে। যাতে আমার মৃত্যুর পরে কিছু করে খেতে পারে।’
জিহাদের সহপাঠীরা বলেন, ‘ইবির ইংরেজি বিভাগে জিহাদকে পেয়ে আমরা গর্বিত। সে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ভর্তি হয়েছে এই বিভাগে। ও দেখিয়ে দিয়েছে হাজারো প্রতিবন্ধকতা দূর করে কীভাবে একজন শিক্ষিত নাগরিক হওয়া যায়।’
ইংরেজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মেহের আলী বলেন, ‘নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে জিহাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছে। পরিবারের অবদানের কারণেই সে আজ এই পর্যন্ত আসতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের বিভাগে ভর্তি হওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমার সাথে ওর কথা হয়েছে। ইংরেজি থেকে আমরা ওকে সব ধরণের সাহায্য-সহযোগীতা করব।’