admin2 ২১ এপ্রিল ২০২২ , ১:৫৮:১৫ 471
সামরুজ্জামান সামুন কুষ্টিয়া ।।
শখের বশে বাড়িতে কয়েকটি ফলের গাছের চারা রোপণ করে আসমা। সেই থেকে ১২ শতাংশ জমি উপর বাড়ির উঠানে গড়ে তুলেছেন নার্সারি। এখন নার্সারি থেকে স্বাবলম্বী আসমা সুলতানা।
কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার তেবাড়িয়া (শাহিন মোড়ে) মানিক হোসেনের স্ত্রী আসমা সুলতানা (৩২)। বৃক্ষপ্রেম ও ভালবাসা থেকে সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় নার্সারি শুরু করেন তিনি। এখন তার পেশা ও নেশা এই নার্সারি। তার নার্সারির নাম দিয়েছে (দিবস) নার্সারি।
বাড়ির উঠানে নিয়মিত বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ ও বনজ গাছ রোপণ করে স্বল্প সময়ে মধ্যে বিক্রি করেন। মাত্র ৭ হাজার টাকা নিয়ে শুরু করেন নার্সারি, তার সাফল্য দেখে গ্রামের আরও প্রায় অনেক উদ্যোক্তা নার্সারি গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন। প্রথমে ফুলজ গাছ ও আম গাছ রোপণ করে।
কয়েক বছরের মধ্যে গাছের গুনগত মান ভালো হওয়ায় অনেকেই আসেন তার বাগান দেখতে। শুরুটা শখের বসে হলেও এক সময় আয়ের উৎসও হয় এই নার্সারি। নার্সারিতে ফল গাছের পাশাপাশি আছে বিভিন্ন ফুল গাছ ও ঔষধি গাছ। আসমা সুলতানার স্বামী মানিক সেলুনের কাজের পাশাপাশি ছোট পরিসরে গাছের চারা রোপন ও বিক্রি শুরু করেন। ধীরে ধীরে চারা বিক্রি বাড়তে থাকে।
মাত্র ৩ বছরের মধ্যেই লাভের মুখ দেখতে পান তারা। সফলতার হাতছানিতেই নার্সারির প্রতি আগ্রহ বাড়ে। বর্তমানে লিজ নিয়ে এক একর জমিতেই বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা নিয়ে গড়ে তুলেছেন নার্সারি। ছোটবেলা থেকেই নার্সারি করার স্বপ্ন ছিল আসমান।
আসমার স্বামী মানিক জানান, প্রথমে বাড়ির উঠানে নার্সারি গড়ে তুলি, বর্তমানে ১ একর জমিতে নার্সারি রয়েছে। এ নার্সারিতে আপেল, কুল, বেধেনা, রামবুটান, এভোকাডো, পিচ, আঙুর, ক্রিসমাস্টি, অর্জুন, আমলকি, হরিতকি, বহেরা, নিম, জয়তুন ও পাথরকুচি, বেলজিয়াম, মেহগনি, সেগুন ও রেইন্ট্রি, এটোলিয়াম, নাইটকুইন, এ্যারোমেটিক জুঁই, তেজপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচ, লবঙ্গ, ক্যাকটাস, ছাকুল্যান্টম, পাতাবাহার, এ্যারোলিয়া, কবরীসহ আরও হরেক রকম ফলজ, বনজ, ফুলের চারা উৎপাদন ও বিপণন হচ্ছে। এবছর এই জায়গায় বিভিন্ন বনজ, ফলদ, ঔষধি ও ফুলের চারা রোপন করেছেন।
এছাড়াও নার্সারিতে প্রায় দেড় শতাধিক প্রজাতির বনজ ও ফলজ গাছ রয়েছে। আমের জাতের মধ্যে সূর্যডিম, হাড়িভাঙ্গা, ল্যাংড়া, আম রুপালী হিম সাগর, গুটি ফজল সহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ টি জাতের চারা রয়েছে। ফুলের মধ্যে থাই গোলাপ, রজনীগন্ধা, চায়না টগর, হাছনাহেনা, বকুল, কৃষ্ণচূড়া সহ প্রায় শতাধিক প্রজাতির চারা রয়েছে। এছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছও।তিনি আরও জানান, সেলুনের কাজের পাশাপাশি এই নার্সারিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা।
পরিবারের অভাব অনটনেও কখনোই নার্সারির স্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়নি। আসমা সুলতানা বললে, আমার স্বামী সেলুনের এর দোকান কাজের পাশাপাশি দিবস নার্সারি গড়ে তুলি দুই জনে মিলে। বাড়ির উঠানে জায়গা স্বল্পতা কারণে ময়ান মোড়ের পাশে কিছু জায়গা লিজ নিয়ে ওখানে নার্সারি করছি। নার্সারি থেকে যে আয় হয় তা দিয়ে আমাদের ভালোই চলে।
এসব চারা কখনো সরাসরি নার্সারি থেকে, কখনো স্থানীয় বাজারে থেকে সংগ্রহ করা হতো। এখন আমাদের নার্সারিতে শত শত রকমের ফলজ বনজ ঔষধি গাছ রয়েছে। এ ছাড়া তার নার্সারিতে ৫ জনের, কর্মসংস্থান হয়েছে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রাইসুল ইসলাম জানান, উপজেলা তে প্রায় ১৩ টি নিবন্ধিত নার্সারি আছে, এর বাইরেও আরো অর্ধশতাধিক নার্সারি রয়েছে।
মানিক দম্পতির নার্সারি এরইমধ্যে সৌখিন ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। তিনি বলেন বিভিন্ন এলাকায় যারা নার্সারি করেছেন তাদের নার্সারি নিয়মিত পরিদর্শন ও পোঁকামাকড় আক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য পরমার্শ দেওয়া হচ্ছে।
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | |||
৫ | ৬ | ৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ |
১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ |
১৯ | ২০ | ২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ |
২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ | ৩০ |