সাতক্ষীরার মহাসড়কগুলো পিচের ঢালাই হলেও দেখে বোঝার কোন উপায় নেই এগুলো পাকা সড়ক। কারণ ট্রাক্টর ও টলিতে করে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া মাটি পড়ে সড়কগুলো বেহাল ও মারাত্মক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার রাতে হালকা বৃষ্টির পর এ অবস্থার সৃষ্টি হয় রাস্তাগুলোয়। বৃষ্টির পর থেকে সড়কগুলোতে কাদা মাটি ভিজে একাকার হয়ে পড়েছে।
এর ফলে এসব সড়ক দিয়ে চলাচল একেবারেই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে মোটরসাইকেল ও ছোট ছোট গাড়ির চালকরা। সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিভিন্ন সড়কগুলোর এখন একই দশা। কাদা ও মাটিতে একাকার হয়ে সড়কগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা হাঁটা পথে যেতেও চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হচ্ছে পথচারীদের।
সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বেতনা নদী খননের মাটি সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা, বিনেরপোতা ও কলারোয়ার যুগিবাড়ী এলাকা থেকে অবৈধভাবে বিক্রি হওয়া মাটি স্থানীয় ইটভাটা মালিকরা সল্পমূল্যে কিনে তড়িঘড়ি করে অবৈধ ট্রাক্টরে অতিরিক্ত মাটি নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় পড়া মাটির ওপর বৃষ্টির পানি লাগলেই মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর ধরে কতিপয় ইটভাটার অবৈধভাবে চলা ট্রাক্টর, ডাম্পার ও টলি পাকা রাস্তা দিয়ে নিয়মিত মাটি নিয়ে বিভিন্ন ইটভাটায় চলাচল করার সময় এসব যানবাহন থেকে মাটি রাস্তায় পড়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ইট ভাটার ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন যানের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বহন করা মাটি সড়কে পড়ে। সেই মাটি থেকে ধুলোর সৃষ্টি হয়। ফলে বেশকিছু দিন ধরে ধুলো বালিতে বসবাস করাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছিল। এখন বৃষ্টি হওয়াতে পাকা রাস্তাটি কাদাময় হয়ে পড়েছে। চলাচলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বেড়েছে দুর্ভোগ। হঠাৎ বৃষ্টির কারণে এসব সড়কে এতটাই পিচ্ছিল হয়েছে যে, গাড়ী চলাচল তো দূরের কথা হেঁটেও চলাচল করা যাচ্ছে না।
রাস্তায় চলাচলকারী আহত মোটরসাইকেল চালক মাসুদ রানা জানান, শনিবার রাতে হাল্কা বৃষ্টি হওয়াতে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়ায় অবস্থিত এসবি ইটভাটার সামনে আমিসহ আরও ৪ থেকে ৫ জন মোটরসাইকেল আরোহী পড়ে গুরুতর আহত হই। সেই সাথে দামি দামি মোটরসাইকেলগুলোর অবস্থাও খুব খারাপ হয়ে গেছে।
আরও অনেকে জানান, ইটভাটার কাজে নিয়োজিত মাটিবাহী যানবাহন থেকে রাস্তায় পড়ে যাওয়া মাটি রোদের সময় রাস্তায় শুকিয়ে ধুলা আর বর্ষায় কাদা হয়ে থাকে দেখে বুঝার উপায় থাকে না এটা কার্পেটিং রাস্তা। তাছাড়া গত কয়েকদিন আগে তুজলপুরে স্টার ইটভাটার সামনে একই সমস্যার কারণে একটি হানিফ পরিবহন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে ৮ থেকে ১০ জন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। ফলে বছর জুড়েই এই সড়কে চলাচল করতে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কগুলোতে যদি এখনই কোন ব্যবস্থা শ্রহণ করা না যায় তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। বিশেষ করে আগামী বর্ষা মৌসুম তো আছেই। এজন্য এখনই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী হয়ে পড়েছে। তা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এ বিষয়ে ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান এলাকাবাসী।