সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ফ্যান সংস্কার করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের জেরে দুই জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালীতে এঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই আমির হোসেন নামের একযুবক নিহত হন এবং পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে আব্দুল কাদেরে মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শ্যামনগরে ফ্যান সংস্কার করাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত। রমজাননগর ইউনিয়নের টেংরাখালী ৮ নং ওয়ার্ডের আরশাদ আমিন এর মোড়ে রেজাউলের দোকানে বৃহস্পতিবার বিকালে ফ্যান সংস্কার করতে যান আব্দুল কাদের। সেখানে বসে থাকা মৃত দাউদ গাজীর ছেলে আব্দুল আজীজ আব্দুল কাদেরের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (৮ জুলাই) বিকালে ৮ নং ওয়ার্ড আ.লীগ কার্যালয়ে সাংগঠনিক আলোচনা করার সময় বিএনপি সমর্থিত ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লালটু ও ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য আজগার আলি বুলু’র নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন নিয়ে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারী আ.লীগ অফিসে বসে থাকা অবস্থায় হামলা করে।
তাদের বাধা দিতে গেলে মৃত আবুল গাজীর ছেলে মোঃ আমির হোসেন এবং ছাকাত শেখের ছেলে ৮ নং ওয়ার্ড আ.লীগের সদস্য আব্দুল কাদের, আব্দুল বারী গাজীর ছেলে ইব্রাহিম গাজী, কফিল উদ্দিন গাজীর ছেলে মোহাম্মদ হান্নান, সিদ্দিকী কয়াল এর ছেলে ইসমাইল, সিদ্দিক গাজীর ছেলে আক্তার ও ইমাম গাজী, মৃত আজাদ গাজীর ছেলে আব্দুল কাদের ও আবু বক্কর সিদ্দিক, আলমগীর কয়ালকে মারপিট করে গুরুতর জখম করে। তাদের উদ্ধার করে শ্যামনগর হাসপাতালে ভর্তি করে।
শ্যামনগর হাসপাতালের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার জানান, আমির হোসেন হাসপাতালে পৌঁছানোর পূর্বেই মারা গেছেন। এছাড়া ছাকাত শেখের ছেলে আ.লীগের সদস্য আব্দুল কাদের শারীরিক অবস্থা অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠায় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারী।
এদিকে, বর্তমান ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ লালটু সমর্থিত আহতরা হলেন রশিদ কাওয়াল এর ছেলে নাসিরুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী মোল্লার ছেলে সোবাহান, সুলতান গাজীর ছেলে সাদেক, লালটু গাজীর ছেলে আলাউদ্দিন, ইউপি সদস্য আবদুল হামিদ লালটুর ছেলে মেহেদী হাসান বাবু, দাউদ গাজীর ছেলে আজিজ গাজী, ইমাম গাজীর ছেলে হাফিজুর, ফারুক মোল্লা, সিরাজুল ও হোসেন।
শ্যামনগর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. শিরুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষে নিহত ১ জনকে ময়নাতদন্তের জন্য এবং আহত ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্যামনগর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াহিদ মুর্শেদ বলেন, সংঘর্ষের খবর শোনা মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে আনে। তদন্ত পূর্বক দোসীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। নিহতদের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আ.লীগ নেতার মৃত্যুত শোক প্রকাশ করেছেন ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ।