দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই উল্লেখ করে ন্যাশনাল পিপলস অ্যালায়েন্সের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বাজারে চাল, তেল, ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। চড়া দামে শহুরে দরিদ্রদের অবস্থা।
শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দমনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, দরিদ্র মানুষের সস্তায় কেনা শেষ পণ্য মোটা চালের কেজি ৫০ টাকায় পৌঁছেছে। অন্যান্য পণ্যের মূল্য সমীকরণ চালের দামের উপর নির্ভর করে। এতে কৃষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীসহ সীমিত আয়ের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সারাদেশে কালোবাজার বিরোধী তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, মজুতদারদের মজুদ ও গুদামজাতকরণের সংকট রয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে মহামারীর পরে, আমরা দেখেছি সারা বিশ্বের মানুষ একদিকে অনাহারে মারা যাচ্ছে, অন্যদিকে মজুদকারী সংস্থাগুলি তাদের পণ্যগুলি সমুদ্রে ফেলে দিচ্ছে। আমরা ‘৪৩ এবং ‘৭৪ এর সমালোচনামূলক ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছি। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার আগেই মজুতদারির কালো আউটে আক্রান্ত হয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, কিছু অসাধু মধ্যস্বত্বভোগী লোনা পানির দেশে কৃত্রিম সংকট ও গুজব ছড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করেছে। কীভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে পেঁয়াজের বাজারকে অস্থিতিশীল করা হয়েছিল তার বড় প্রমাণ। বর্তমানে একদিকে করোনা মহামারী, কর্মসংস্থানের অভাবে বাড়ছে বেকারত্ব, ডেঙ্গু জ্বরের আতঙ্ক, অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর একটাই কারণ, আয় কমার বিপরীতে সব কিছুর দাম বেড়েছে এবং সব টাকা পুঁজিপতিদের ঘরে বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, টিসিবি পণ্যের প্রাপ্যতা ও ভোক্তা অধিকার রক্ষা করে কালোবাজারি ও মজুদদারি দমনের সময় এসেছে। কৃষিতে মনোযোগ দিলে খাদ্যের যোগান বাড়ানোর পাশাপাশি অসঙ্গতি মোকাবেলা করা সম্ভব হবে। অন্যথায় আমাদের ভাগ্যে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গণজোট শুধু জনগণের কথা বলে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশ ভয়াবহ সংকটে পড়বে। সরকার আমাদের দাবি না মানলে সারাদেশের জনগণের সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলবে।
আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার আন্দোলনের চেয়ারম্যান মহিবুল্লাহ পীর সাহেব স্তাপুরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী ও মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন।