জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ভাড়া বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (৮ নভেম্বর) রাতে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠক শেষে মালবাহী যানবাহনের মালিক-শ্রমিক নেতারা ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেন।
এর আগে বেলা সোয়া ৮টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মালিক-শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে বৈঠক শেষ হয়।
বৈঠকে মালিক ও শ্রমিক নেতারা মালবাহী ভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানান। বৈঠকে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জ্বালানি মন্ত্রণালয় ডিজেলের দাম বাড়িয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সব পরিবহনে এর প্রভাব পড়ছে। এরই মধ্যে বিআরটিএ বাস অপারেটরদের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। মামলায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আজকে পণ্য পরিবহনের মালিক-শ্রমিক নেতারা প্রাইম মুভার, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংকারের মতো পরিবহনের দাবি নিয়ে এখানে এসেছেন। তাদের প্রথম দাবি ছিল তেলের দাম কমানো হোক, বাড়ানো নয়। ‘
“আমরা মনে করি তাদের দাবিটি যৌক্তিক। তাই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি তা হল যে আমরা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এফবিসিসিআইকে তাদের দাবির আলোকে মালবাহী ভাড়া বাড়াতে অনুরোধ করব যারা সরবরাহ করে। সেবা.
তিনি বলেন, আমরা মনে করি তাদের দাবি যৌক্তিক। আমরা বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এফবিসিসিআই সহ সকল স্টেকহোল্ডারদের কাছে এই সুপারিশ করছি, যারা সেবা গ্রহণ করছে। ‘
আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “নেতারা এখানে বসে আছেন। তারা আমাদের সাথে একমত হয়েছেন যে তারা আজ থেকে ধর্মঘট স্থগিত করছেন। ফলপ্রসূ আলোচনার পর অবশেষে তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করবেন।’
শিগগিরই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাস্তবায়নের জন্য যুক্তিসঙ্গত হারে বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হবে।” আলাপ-আলোচনা। মালিকরা গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছিল, যা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পরিবহন চলবে। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব। কীভাবে এটি বাস্তবায়ন করা যায় তা ঠিক করতে মালিক-শ্রমিকরা আবার বসবেন।’
এর জন্য দায়ী সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে কেন তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গেলেন এ বিষয়ে ওসমান আলী বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসিনি, আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফোন করেছে।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমি এটা পরিষ্কার করে দিয়েছি। আপনারা জানেন আমাদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অসুস্থ। এজন্য তিনি আমাকে সময়ে সময়ে অনুরোধ করেন। এ ধরনের সমস্যা দেখতে। গতকাল তিনি আমাদের অনুরোধ করেছেন। বসুন। তাদের সঙ্গে নেমে একটি যৌক্তিক সমাধানে যান আমরা এ জন্য বসে আছি।’
এ সময় ওসমান আলী আরও বলেন, জ্বালানি সচিব ডিজেলের দাম বাড়ানোর যুক্তি তুলে ধরেছেন। আমরা বলেছি তেলের দাম বাড়লে আমাদের ভাড়া ৩০ শতাংশ বাড়াতে হবে। চুক্তি হয়েছে এবং ভাড়া যৌক্তিকভাবে সমন্বয় করা হবে।’
বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক প্রাইম মুভার গুডস ট্রান্সপোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহমেদ বলেন, “আমাদের দাবি ছিল ভাড়া ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করা।” সন্তোষজনক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে …বিস্তারিত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো উপস্থিত নেই। তাই আমরা আমাদের প্রোগ্রাম আপাতত স্থগিত করেছি। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ যুক্তিসঙ্গত ভাড়া বাড়াতে নোটিশ জারি করবে। ‘
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিসুর রহমান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। বিআরটিএ), বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক প্রাইম মুভার গুডস ট্রান্সপোর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
৪ নভেম্বর থেকে জ্বালানি তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৬৫ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। দাম বেড়ে যাওয়ায় ৪ নভেম্বর থেকে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন মালিকরা। ৪ নভেম্বর থেকে যাত্রীবাহী বাস চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
ভাড়া বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার যাত্রীবাহী বাস চলাচল শুরু করলেও মালবাহী যানবাহনের মালিকরা তাদের ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন।