যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স প্রসঙ্গে নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা সন্ত্রাস দমনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। যেখানেই সন্ত্রাস সেখানেই সরকার সোচ্চার এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) দিনাজপুরের কাহারোলের কান্তজি মন্দিরে ঐতিহাসিক রাস উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, সন্ত্রাসের কোনো ধর্ম নেই। হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ধর্ম দিয়ে তাদের বিচার করা যায় না। সন্ত্রাসীরা সব সময় সন্ত্রাসী। তাদের ধর্ম সন্ত্রাস। কিন্তু আমরা যখন ব্যবস্থা নিই না, তখন যারা সন্ত্রাসকে লালন করে তারা সন্ত্রাসের পক্ষে কথা বলে। কুমিল্লার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের পর কি বললেন মির্জা ফখরুল? বলছেন এটা এক ধরনের নাটক। তবে আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর।
একটি মহল দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শান্তি বিনষ্ট করতে রাতের আঁধারে কোরআন শরিফ মূর্তির হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দিতে বায়তুল মোকাররমে কোরআন পোড়ানো হয়। তারা পারেনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সন্ত্রাসের পক্ষে গেলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা থাকে না। সেটা বিএনপি-জামায়াতের আমলে। রাজশাহীতে আমরা দেখেছি বাঙ্গালী ভাইয়েরা কিভাবে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশ সেদিন অসহায় ছিল। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদের প্রজননক্ষেত্রে পরিণত করতে এবং আঞ্চলিক শান্তি বিঘ্নিত করতে ১০ ট্রাক অস্ত্র পাচার করা হয়েছিল। বাংলাদেশে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। বাংলাদেশের কোনো নিরাপত্তা ছিল না। শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। আজ আমরা প্রতিবাদ করতে পারি যে শেখ হাসিনা আছেন। আমি দাবি করতে পারি। শেখ হাসিনা না থাকলে, আওয়ামী লীগ না থাকলে সন্ত্রাসীরা এই বাংলাদেশ চালিয়ে দেশে সন্ত্রাস প্রতিষ্ঠা করত।
খালিদ বলেন, পঁচাত্তরের পর কোনো ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নেই। কারণ ধর্ম ছিল রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের হাতিয়ার। জিয়া এরশাদ খালেদা জিয়া ধর্মকে হাতিয়ার করে দেশ দখল করেছেন। কিন্তু মানুষ নিরাপদ ছিল না। ভয়ে মানুষ মসজিদ-মন্দিরে যেত এমন পরিস্থিতি ছিল। কারণ বাংলাদেশে আইনের শাসন ছিল না। যারা জাতির পিতার হত্যার ক্ষতিপূরণ দিয়েছে তারা আমাকে রক্ষা করতে পারবে না।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন প্রথম ক্ষমতায় আসেন, তখন আমি আনন্দের অশ্রু দেখেছিলাম। তারা তাদের নিরাপত্তা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে না এই কালো আইন আমরা বাতিল করেছি। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বারিউল করিম খান। এর আগে আব্দুর রউফ চৌধুরী ফাউন্ডেশন ও সিটিজেনস ইনিশিয়েটিভের সৌজন্যে দিনাজপুর ম্যারাথনে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী। পরে মহসিন আলী বিরল নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে সাইকেল ও বৃত্তি বিতরণ করেন এবং ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।