ইউক্রেনের যেসব এলাকা রাশিয়া দখল করে নিয়েছে, সেগুলোকে রক্ষায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে রাশিয়া। এমন এক স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের উপপ্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ। এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভিয়াচেসলভ ভলোদিন ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে সহকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মেদভেদেভ টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, দনবাস প্রজাতন্ত্রগুলো ও অন্য এলাকাগুলোতে গণভোট হবে এবং এগুলো রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হবে। রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী এসব ভুখণ্ডের সুরক্ষা অনেক বেশি জোরদার করবে। তিনি এ বার্তায় বলেন, এ ধরনের সুরক্ষার জন্য শুধু রিজার্ভিস্ট সৈন্যরা নয়, কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র’ এবং নতুন প্রযুক্তির অস্ত্রসহ যে কোনো ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হতে পারে বলে রাশিয়া ঘোষণা করেছে।
মেদভেদেভ ন্যাটোর ‘অবসরপ্রাপ্ত নির্বোধ সেনানায়কদের’ পরামর্শ দেন তারা যেন ক্রিমিয়ায় ন্যাটোর আক্রমণের কথা বলে রাশিয়াকে ভয় না দেখান। এর আগে বুধবার প্রেসিডেন্ট পুতিনের দেওয়া ভাষণেও পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত ছিল বলে বিশ্লেষকরা বলছেন। পুতিন তার ঐ ভাষণে ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত এলাকাগুলোর জনগণকে রক্ষার জন্য রিজার্ভিস্ট সেনা সমাবেশের কথা ঘোষণা করেছিলেন, যে এলাকাগুলোকে রাশিয়ার অংশ করে নিতে অচিরেই গণভোট আয়োজনের কথা বলা হচ্ছে।
পারমাণবিক অন্ত ব্যবহার ‘অত্যাসন্ন?’
বিবিসির বিশ্লেষক গর্ডন কোরেরা বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার এখনো বেশ দূরের ব্যাপার। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সামরিক নীতি অনুযায়ী, শুধুমাত্র রুশ রাষ্ট্র হুমকির মুখে পড়লেই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে। পুতিন তার হুশিয়ারি দেওয়ার সময় ‘পশ্চিমা হুমকির জবাব দেওয়া’র কথা বলেছেন। আর ফাঁকা হুমকির মুখে পড়ছে এমন একটা পরিস্থিতির প্রসঙ্গে।
গর্ডন কোরেরা বলছেন, ইউক্রেনের তথাকথিত গণভোটের পর রাশিয়ার ভূ-খণ্ডের সীমানা কতদূর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে বলে পুতিন মনে করেন-_সেটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
রুশ সেনা মোবিলাইজেশন শুরু
রাশিয়ার আঞ্চলিক অখণ্ডতা নিশ্চিত করা এবং রুশ-অধিকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চলের জনগণকে রক্ষা করার কথা বলে রিজার্ভিষ্ট সৈন্য সমাবেশ করার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এনিয়ে একটি ডিক্রিতে সই করেছেন তিনি এবং ইতিমধ্যেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। যদিও এই প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে এবং অনেকে যুদ্ধ না করতে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন।
রুশ পররাষ্ট্র ওয়াকআউট
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। তিনি অভিযোগ করেন, দনবাস অঞ্চলে সব দায় রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে ইউক্রেন এবং পশ্চিমারা দায়মুক্তি চায়।
জানা গেছে,
ল্যাভরভ ৯০ মিনিট দেরিতে বৈঠকে আসেন এবং পরে অভিযোগ জানিয়ে চলে যান। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেন, আমি ল্যাভরভের ওয়াকআউটে মোটেও বিস্মিত হইনি। তবে এই বৈঠকে ইউক্রেনের তাদের অন্যায় যুদ্ধের বিষয়ে সামষ্টিক মতামত শুনে যাওয়া উচিত।
– বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান