রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে থাকেন সুবর্ণা আক্তার। তিনি একজন গৃহকর্মী। তবে বিত্তবানদের বাসায় কাজ নিয়ে সুযোগ বুঝে স্বর্ণালংকারসহ দামি জিনিসপত্র চুরি করে উধাও হয়ে যান তিনি।
পুলিশ বলছে, গৃহকর্মীর আড়ালে চোরচক্রের সক্রিয় সদস্য সুবর্ণা। সম্প্রতি তিনি রাজধানীর বনানী এলাকায় কাজ নেন শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের বাসায়। ওই বাসা থেকে কিছুদিন পর খোয়া যায় স্বর্ণালংকার।
ঘটনাটি কয়েক মাস আগে ঘটলেও প্রকাশ্যে আসে কিছুদিন আগে। এরপরই গত ৭ ফেব্রুয়ারি বনানী থানায় একটি চুরির মামলা হয়। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় ডিবি গুলশান বিভাগ। তদন্তে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গোয়েন্দা পুলিশ গৃহকর্মী সুবর্ণা আক্তারসহ তার এক সহযোগীকে আটক করে। আটক অন্যজনের নাম রবিন।
রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) কড়াইল বস্তি ও শাহজাদপুর থেকে তাদের আটক করে ডিবি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিম। এসময় তাদের কাছ থেকে চুরি হওয়া কিছু স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) শেরেবাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণালংকার বুঝিয়ে দেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার ও ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান প্রমুখ।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিবি গুলশান বিভাগের ক্যান্টনমেন্ট জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) এস এম রেজাউল হক জানান, ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে গত ৪ জানুয়ারি মধ্যে কোনো এক সময়ে বনানীর ওই বাসা থেকে স্বর্ণের চুড়ি, লকেটসহ বেশকিছু স্বর্ণালংকার চুরি হয়।
ডিবির এ কর্মকর্তা জানান, মামলাটির দায়িত্ব পাওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্য ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে প্রথমে কড়াইল বস্তিতে একজনের সন্ধান নিশ্চিত হওয়া যায়। পরবর্তী সময়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি কড়াইল বস্তির ভাড়া বাসা থেকে আটক করা হয় সুবর্ণা নামের গৃহকর্মীকে। এ সময় তার কাছ থেকে এক ভরি সাত আনা পাঁচ রতির একটি স্বর্ণালংকার ও ১০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, শাহজাদপুরের একতা জুয়েলার্সের রবিনকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও ১০ হাজার টাকা।
এডিসি রেজাউল হক বলেন, আটকরা একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্য। সুবর্ণা বিভিন্ন সময় বিত্তবানদের বাসায় কাজের বুয়া সেজে কাজ করতে যান। কাজের ফাঁকে স্বর্ণালংকার, টাকা ও মূল্যবান সম্পদের প্রতি দৃষ্টি রাখেন। কিছুদিন কাজ করার পর সুযোগ বুঝে বাড়ির মালিকের অগোচরে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে উধাও হন। চোরাই এসব স্বর্ণালংকার আটক রবিনের কাছে বিক্রি করতেন সুবর্ণা।