বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ সাতক্ষীরার আকর্ষণ সড়ক পথে সুন্দরবন। বিশ্ব ঐতিহ্য ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সুন্দরবন নয়ন অভিরম বনের প্রকৃতি পরিবেশ দেখতে দেশ-বিদেশের প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন উপকূলের এই জনপদ মুন্সিগঞ্জ বুড়িগোয়ালিনীর পর্যটন স্পটগুলোতে।
সাতক্ষীরা পশ্চিম বনবিভাগ এর আওতায় মুন্সীগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী নীলডুমুর এলাকা থেকে প্রতিদিন টলার যোগে শত শত পর্যটক সুন্দরবন কলাগাছিয়া, দোবেকী নামক স্থানে ভ্রমণ করতে আসে। বর্তমানে শীত মৌসুমের শেষের দিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হলে পর্যটকদের ভিড় জমে উঠেছে সুন্দরবন ভ্রমণে।
ঠিক সেই সময় হঠাৎ করে সাধারণ পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমনে ১৫ পারসেন ভ্যাট সহ ২৩ টাকা থেকে দ্বিগুন করে ৪৬ টাকা ভ্রমণ রাজাস্ব বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্বের কোনো ঘোষণা ছাড়াই এ ধরনের রাজস্ব বৃদ্ধি করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পর্যটকগণ ও সাধারণ সুন্দরবন নির্ভরশীল ট্রলার মালিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।
ট্রলার শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর সবুর, প্রদীপ মণ্ডা মিজানুর রহমান বলেন দুই বছর করোনার কারনে বন্ধ থাকায় আমরা কষ্টে দিন কেটেছে। যখন পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে তখন আবার রাজস্ব বৃদ্ধি করা হলো, এতে করে আমাদের ঝুঁকি বাড়লো। এখানে দেখা গেছে সাধারণ দেশীয় পর্যটকগণ ভ্রমণ করতে এসে, যখন ভ্রমণ কর বেশি দেখছেন, তখন তাদের মধ্যে বিমুখ অবস্থা তৈরি হচ্ছে।
এবিষয়ে মুন্সীগঞ্জ ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি কে এম আনিসুর রহমান বলেন সুন্দরবন ভ্রমণ রাজশ্ব বিষয়টা আগে থেকে জানানো হয়নি সে কারণে পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ এসে দূর্ভোগে পড়ছে। সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেকেই ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। স্কুল কলেজ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিয়ে না আসতে পেরে তারা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারছে না।
এ বিষয়ে বন বিভাগের বুড়িগোয়ালিনী স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম জানান ভ্রমণ রাজস্ব বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের পূর্বে থেকে জানিয়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল না। এ সিদ্ধান্তটি মন্ত্রণালয় এবং উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের থেকে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, পূর্বে প্রজ্ঞাপন টা আমরা পেলেই জানিয়ে দিতে পারতাম। আমরা হঠাৎ করে জেনেছি এবং সেভাবেই টলার মালিকদের সাথে কথা বলে দিয়েছি, আমরা নিয়ম নীতির আলোকে চলতে হয় তাই আমাদের কিছু করার নাই।
বুড়িগোয়ালিনী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন রাজস্ব বাড়লে আমরা আগের থেকে পর্যটকদের জানিয়ে দিতে পারতাম। এখন আমরা ভ্রমণকারীদের কে জানিয়ে দেওয়ার সুযোগ পায়নি। সে কারণে সাতক্ষীরার পশ্চিম সুন্দরবনের ভ্রমণকারী পর্যটকরা ঝুঁকিতে পড়ছে। অনেক এসে ফিরে যেতে দেখা যাচ্ছে।
বর্তমানের বন বিভাগের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সুন্দরবন ভ্রমণের তথ্য অভয়রণ্য এলাকায় ভ্রমণ ফি প্রতিজন প্রতিদিন ৩০০ টাকা, দেশি ছাত্র-ছাত্রী গণ প্রতিদিন ৫০ টাকা, বিদেশি পর্যটক প্রতিদিন ৩০০০ টাকা।
অপ্রাপ্তবয়স্ক ১২বছরের নিচে প্রতিদিন দেশী পর্যটক প্রতি জন ৩০ টাকা, একদিনের জন্য ১৫০ টাকা দোবেকি, কলাগাছিয়া জন্য প্রতিজন ৪০টাকা সাথে ভ্যাট ১৫ পারসেন ।তাছাড়া গাইট ম্যান, গার্ড ম্যান ফি বাড়ানো হয়েছে রাজস্ব।
বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ভ্রমণে আসা দর্শনার্থীরা সুন্দরবন ভ্রমনের জন্য সহজতর করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। স্থানীয় ট্যুরিজম সেক্টরে নির্ভরশীল মানুষেরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।