সাতক্ষীরায় শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (০১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠণ অগ্রগতি সংস্থা এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র যৌথ আয়োজনে মানবন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মদ আলী সুজন, অগ্রগতি সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আব্দুস সবুর বিশ্বাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের শিশু অধিকার ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী অম্বিকা রায়, সাংবাদিক ফরিদ আহমেদ ময়না, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্বল প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, করোনাকালীন সময়ে সাতক্ষীরায় বাল্য বিবাহ মহামারি আকারে ধারণ করেছে। সেই সঙ্গে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে নারী ও শিশু ধর্ষণ। তবে এসব ঘটনার দ্রুত বিচার বাস্তবায়নে নেই কার্যকরি কোন প্রশাসনিক পদক্ষেপ।
তারা বলেন, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করোনাকালীন ২২ মাসে সাতক্ষীরায় ৩০৯ জন নারী ও শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১১৩ জন ও ২০২১ সালে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৯৬ জন।
করোনাকালীন সময়ে বিভিন্ন বয়সী নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষণের যেসব ঘটনা ঘটেছে তা বিগত কয়েক বছরের তুলনায় অনেক বেশি। বয়স্ক নারীর থেকে কন্যা শিশুদের ধর্ষণের ঘটনা বেশি ঘটেছে।
এছাড়া করোনাকালে সাতক্ষীরায় বাল্য বিবাহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। সাতক্ষীরা জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এখন উপস্থিতির হার অনেকাংশে কমে গেছে।
সাতক্ষীরায় করোনাকালীন বাল্য বিবাহের হার বালিকা বিদ্যালয় গুলোতে ১২ দশমিক ৪০ ভাগ, মাদরাসা গুলোতে ১৩ দশমিক ২৯ ভাগ এবং যৌথ বিদ্যালয় গুলোতে ৯ দশমিক ৬৭ ভাগ।
বাল্য বিবাহের হার আশংকাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের যৌন নির্যাতনসহ পারিবারিক নির্যাতনের হারও অনেকাংশে বেড়েছে।
বক্তারা এ সময় ভবিষ্যত প্রজন্মকে শান্তিময় ও নিরাপদ পৃথিবী দিয়ে যাওয়ার জন্য বাল্য বিবাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে রাষ্ট্র তথা স্থানীয় সরকার, প্রশাসনসহ সমাজের দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
শুধু প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই এটি বন্ধ করা সম্ভব নয় সামাজিকভাবে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
পরে একই দাবীতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় সংবাদ সম্মেলন।