যদি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের (আইএসপি) মাধ্যমে নেওয়া ইন্টারনেট টানা তিন দিন বন্ধ থাকে, তাহলে পরিষেবা প্রদানকারী সেই মাসের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে চার্জ নিতে পারবে না। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ স্বাক্ষরিত আইএসপিকে পাঠানো চিঠিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এছাড়াও, যদি পরপর একদিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়, তাহলে মোট বিলের ৫০ শতাংশ বিল করা হবে এবং যদি টানা দুই দিন পরিষেবা বিচ্ছিন্ন থাকে, তাহলে মোট বিলের ২৫ শতাংশ মাসিক বিল করা হবে।
নির্দেশনাটি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকেও পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আইএসপি অপারেটররা গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম বিল নেয়। এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) মহাসচিব ইমদাদুল হক বলেন, “আমরা এ বিষয়ে নির্দেশনা পেয়েছি। এখানে একটি শর্ত আছে। আইআইজি (আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে) বন্ধ থাকলে এটি প্রযোজ্য হবে না। যদি তা না হয় তবে তা প্রযোজ্য হবে না। পরপর তিন দিনের ছুটি খুব কম ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়। এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নিম্নমানের ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়া হয় পেশী শক্তি ব্যবহার করে। অন্যান্য উচ্চমানের কোম্পানিকে প্রবেশ করতে দেবেন না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এটি দুই বা তিন ঘন্টার বেশি।
বিটিআরসির নির্দেশিকা অনুযায়ী, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর বাস্তবায়নের জন্য বাস্তবসম্মত এবং গ্রাহক বান্ধব ইন্টারনেট ট্যারিফ প্রণয়নের জন্য এক দেশ, এক হারের শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এবং মোবাইল। যুক্তিসঙ্গত স্তরে ব্যবহার করুন। প্রতিটি সেবার মান নির্ধারণের জন্য সার্ভিস গ্রেড প্রস্তুত করা হয়, সেবার মান এবং অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে, গ্রাহক পরিষেবা এবং শুল্ক সহ সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় জরিমানা সহ।
প্রতিটি আইএসপি গ্রাহকদের সেবা ও সেবার মান নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় শাস্তির শর্তসহ সেবার মান ও অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি সেবার মান অনুযায়ী বর্ণিত এ, বি এবং সি গ্রেড অনুযায়ী পরিষেবা গ্রেড বজায় রাখতে বাধ্য থাকবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যদি অনুমোদন ছাড়া শুল্কের বাইরে কোনো সেবা পরিচালিত হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এতে আরও বলা হয়েছে যে গ্রাহকদের অভিযোগ (টিকিটং নম্বর সহ) দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। গ্রাহক অভিযোগ করলে বিটিআরসি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির তথ্যও কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিযোগ জানাতে তাকে খুবই বিব্রত হতে হয়েছে। অগ্রিম বিল আদায় বন্ধ হলেই বাস্তবায়ন সম্ভব। ওয়ান কান্ট্রি ওয়ান রেট বাস্তবায়নে কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রমের বেশ কিছু দুর্বলতা রয়েছে। একটি দেশ এখনো একটি হার বাস্তবায়ন করেনি। বড় কোম্পানিগুলো এখনো তাদের প্যাকেজের হার কমায়নি। কমিশনকে এ ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। যেভাবেই হোক এটি বাস্তবায়িত হবে। কোন সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে আলোচনা করা হবে। আমরা উন্নত গ্রাহক সেবা প্রদানের জন্য যেকোনো সময় ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের সাথে বসতে ইচ্ছুক।