সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাবুলিয়া ও বাশঘাটা এলাকায় ড্রাম ট্রাকের শব্দে রাতে ঠিকমত ঘুমাতে পারে না খেটে খাওয়া মানুষ। ধুলা আর ভাত এক সাথে ক্ষেতে হয় তাদের।
সারারাত ধরে চলে ড্রাম ট্রাক। দিনের বেলায় ট্রাক আর ভ্যান চলাচলের কারনে প্রায় ঘটছে নানারকম দুর্ঘটনা। আর ইটভাটার পার্শ্বে বসবাসরত মানুষের শ্বাস কষ্ট জনিত রোগ দিন দিন বেড়েইে চলেছে। এই গ্রামের গাছে আর আগের মত ফল ধরে না। গ্রামের মধ্যে বসত বাড়ির জমিতে ইট ভাটা তৈরি করার কারণে এসব সমস্যা হচ্ছে।
ইটভাটার পাশে বসবাসরত মোছাঃ আকলিমা খাতুনসহ আরও অনেকে অভিযোগ করে বলেন, তারা অনেক বার সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছেন। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যারা দেখভাল করার জন্য আসে তারা ভাটা মালিকের নিকট থেকে নগত নারায়নে তুষ্ট হয়ে চলে যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বাবুলিয়া এলাকায় মেসার্স এস বি এল ব্রিকস এর চারিপাশে স্তুুপ আকারে সাজানো রয়েছে জ্বালানী কাঠ। একইভাবে তুষকাঠ ও টায়ার পোড়ানো কালি ব্যবহার করা হচ্ছে।
বাশঘাটা এলাকায় মেসার্স সনি ব্রিকস এর ভাটায় ঢোকার মুখে একটি বড় ঘরে সাজানো রয়েছে তুষকাঠ ও টায়ার পোড়ানো কালি। এভাবে জনবসতি এলাকায় অবস্থিত ভাটায় জ্বালানি হিসেবে পুরোদমে কাঠ, তুষকাঠ ও টায়ার পোড়ানো কালি ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ভাটার কালো ধোঁয়া বায়ু দূষণ করে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণকে।
স্থানীয় আব্দুল গফুর জানান, সনি ব্রিকস এর পার্শ্বে রয়েছে স্কুল ও মাদ্রাসা। নিয়ন্ত্রণহীন ভাবে রাস্তায় ইট বোঝায় ট্রাক আর ট্রলি চলা চলের কারণে তাদের ছেলে মেয়েদের এই রাস্তা দিয়ে স্কুল, মাদ্রাসা যেতে দারুন কষ্ট হয়।
এই গ্রামের মধ্যে ইটভাটা হওয়ার করণে রাত ১২টার পরে চলে ড্রাম ট্রাক। আর এই ড্রাম ট্রাকের শব্দে খেটে খাওয়া মানুষ রাতে ঘুমাতে পারে না। দিনের বেলায় ভ্যান ট্রাক চলার করণে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। অসংখ্যা ছাগল ইতি মধ্যে ট্রলি আর ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছে।
এসময় মোছাঃ সাজিদা খাতুন বলেন, ধুলা আর ভাত এক সাথে ক্ষেতে হয়। ভাটার ম্যানেজারকে বার বার পানি দেওয়ার কথা বললে, অশ্লীল ভাষায় গালি দেয়। আমাদের বাড়ীর গাছে এখন আর আগের মত ফল ধরে না। ভাটার কারণে এই এলাকার মানুষের রোগ ব্যাধি বেড়ে গেছে।
একই এলাকার মোছাঃ মরিয়ম ও রিজিয়া বেগম বলেন, এই ইট ভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। আমাদের বাড়ীর পার্শ্বে এই ইটভাটা হওয়ার কারণে প্রায় মানুষের শ্বাস কষ্ট জনিত রোগ দিন দিন বেড়েইে চলেছে।
এবিষয় সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম বলেন, জেলার ব্রিকস ফিল্ডগুলো কাঠ, তুষকাঠ, টায়ার পোড়ানো কালি ও প্লাস্টিক জুতা পোড়ানো শুরু করেছে জানতে পেরে আমরা অভিযান পরিচালনা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। অভিযানের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠিও দিয়েছি। ইট ভাটায় কাঠ ও তুষকাঠ পোড়ানো বন্ধসহ জেলার অবৈধ ইটভাটা বন্ধে খুব শীঘ্রই অভিযান শুরু করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এসব ভাটা মালিকরা উচ্চ আদালতে রিট করে তাদের ভাটা পরিচালনা করছেন। যে কারণে রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত, তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযান পরিচালনা করা যাচ্ছে না