প্রধান শিক্ষককে শোকজ : কুমারখালীর বুজরুক বাঁখই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে ৫২ হাজার টাকায় জাল সনদ বিক্রি
সর্বশেষ আপডেট : বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪
কুমারখালী প্রতিনিধি ॥ ৫২ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে বয়স ও নামের আংশিক পরিবর্তন করে জাল সনদ প্রদানের অভিযোগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোনায়েম খানকে শোকজ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (৫ মার্চ) চাকুরী শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধি পরিপন্থী এবং নীতিমালা ২০২১ অনুযায়ী তাকে শোকজ করেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান। কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবেনা ? এই মর্মে আগামী ১০ দিনের মধ্যে শোকজের জবাব দিবেন প্রধান শিক্ষক। লিখিত অভিযোগ ও শোকজ নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে দুলু ২০১২ সালে বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট ( জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হয়। জেএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্রে তাঁর জন্ম তারিখ ২০-১০-১৯৯৯ ইং। পরে চাকুরির প্রয়োজনে তাঁর একটি সার্টিফিকেটের প্রয়োজনে হলে সে প্রধান শিক্ষকের মো. মোনায়েম খানের কাছে যায়। সেসময় প্রধান শিক্ষক দর কষাকষি করে ৫২ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণ করে বয়স ও নামের আংশিক পরিবর্তন করে ২০০৯ সালে দুলুকে অষ্টম শ্রেণি পাশে দেখিয়ে একটি সার্টিফিকেট তৈরি করে দেন। সার্টিফিকেটটি ২০১৪ সালের ৬ ফেব্র“য়ারি ইস্যু করা হয়। যেখানে জন্ম তারিখ রয়েছে ১৯৯৫ সালের ২৮ মার্চ। আরো জানা গেছে, জাল সার্টিফিকেটটি দুলুর প্রয়োজন মিটাতে ব্যর্থ হলে ২০২৪ সালের ২৭ ফেব্র“য়ারি বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সভাপতির নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেন সভাপতি। এ বিষয়ে অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমি ২০১২ সালে জেএসসির ইংরেজি পরীক্ষায় ফেল করি। পরবর্তীতে একটি চাকুরির প্রয়োজনে অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দরকার হলে আমি মোনায়েম স্যারের কাছে গিয়েছিলাম ২০১৪ সালে। সে সময় প্রধান শিক্ষক প্রথমে এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে দর কষাকষি করে ৫২ হাজার টাকা দিয়ে একটি সার্টিফিকেট নিয়েছিলাম। কিন্তু জাল সার্টিফিকেট আর কাজে লাগছে না। সেজন্য টাকা ফেরত চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে বুজরুক বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিন দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে নেই। বিদ্যালয়ের অন্যরাও জানেনা প্রধান শিক্ষক কোথায় আছেন। এসময় ফোনে প্রধান শিক্ষক মো. মোনায়েম খান জানান, তিনি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে আছেন।
অভিযোগের বিষয় নিয়ে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. ফজলুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে জাল সনদ প্রদান করেছেন। যা এমপিও নীতিমালা ২০২১ পরিপন্থী। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রধান শিক্ষককে গত মঙ্গলবার শোকজ করা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শনোর উপযুক্ত জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বিধিমতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী এজাজ কায়সার জানান, তিনি সভাপতির মাধ্যমে শোকজের বিষয়টি জেনেছেন। তথ্য যাচাই বাছাই শেষে পরে বিস্তারিত জানাবেন।