রাজধানীতে বিশ্রামের জায়গা থাকলে। অন্তত বাড়ি ভাড়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। থাকার জায়গার সন্ধানে মেলায় ভিড় জমাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। তারা কম দামে ফ্ল্যাট কিনতে আগ্রহী। এ কারণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও মিরপুরে নির্মিত ফ্ল্যাটগুলো তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে।
বেশিরভাগ ক্রেতাই নাগালের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে চান। রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের সামনে রিহ্যাব আয়োজিত আবাসন মেলা পরিদর্শনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
দেখা গেছে, ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগমনে মেলা মাঠ মুখরিত হয়ে উঠেছে। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেতাদের ফ্ল্যাট ও প্লটের বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। ক্রেতারা উপযুক্ত দেখায় এমন প্রত্যেককে কল করতে পারে, যদি অল্প কয়েকজন থাকে।
মেলায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সুন্দর সাজানো আবাসন কোম্পানিগুলোর স্টল। ক্রেতারা বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন ও গবেষণা করছেন। এ মেলায় ফ্ল্যাটের চাহিদা অনেক বেশি।
সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্রেতাই ১ থেকে দেড় হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাটের প্রতি বেশি আগ্রহী। আর মেলায় কম দামের তৈরি ফ্ল্যাটের চাহিদা তুলনামূলক অনেক বেশি। অনেক কোম্পানি ফ্ল্যাট বিক্রিতে বিভিন্ন ধরনের ছাড়ও দিচ্ছে।
দীর্ঘদিন ধরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় থাকলেও প্রথমবারের মতো রিয়েল এস্টেট মেলায় অংশগ্রহণ করেছে ইছহাক ডেভেলপার্স লিমিটেড। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কম দামে ১০৮০-২১৩০ বর্গফুটের বিভিন্ন সাইজের ফ্ল্যাট বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া প্রতি বর্গফুট ভবনের দাম ৬ হাজার টাকা হলেও ডেভেলপাররা দাম নির্ধারণ করেছেন ৫ হাজার টাকা।
কথা হয় পরিচালক প্রকৌশলী ফারহাত আফজা লুবনার সঙ্গে।
তিনি বলেন, আমরা আবাসন মেলায় মধ্যবিত্তদের কথা বিবেচনা করে ফ্ল্যাটের দাম নির্ধারণ করেছি। কারণ গ্রাহকরা যদি নাগালের মধ্যে মানসম্পন্ন ফ্ল্যাট কেনেন তবে তারা ইছহাক ডেভেলাপার্সকে সন্ধান করবেন। আমরা বাড়তি মুনাফা করতে চাই না। আমরাও করোনায় ফ্ল্যাট তৈরি করেছি। এই সময়ে নির্মাণ ব্যয় তুলনামূলকভাবে কম হয়েছে। তাই আমরা কম দামে ফ্ল্যাট বিক্রি করছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা গ্রাহকদের ভালো মানের ফ্ল্যাট দিতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্য গ্রাহকদের আস্থা তৈরি করা। এরই মধ্যে আমরা রাজধানীর উত্তরায় একটি প্রকল্পের কাজ শেষ করেছি। এছাড়া রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র এলিফ্যান্ট রোডে আমাদের দুটি প্রকল্পের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। নির্মাণ সামগ্রী থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক টেকসই ফ্ল্যাট।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতবারের মতো এবারও মেলা জমেছে। ইভেন্টটি একই ছাতার নিচে প্লট, ফ্ল্যাট এবং ঋণ সুবিধার জন্য একটি অনন্য সুযোগ তৈরি করেছে। আগ্রহী ক্রেতারা এখান থেকে তাদের পছন্দের প্লট বা ফ্ল্যাট বেছে নিতে পারেন।
কথা হয় মিরপুরের একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আবু জামিলের সঙ্গে।
“বাজেট এবং পছন্দের মধ্যে ফ্ল্যাট এবং প্লট উভয়ই দেখছি,” তিনি বলেছিলেন। মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে অনেক সস্তার ফ্ল্যাট আছে। আমি শীঘ্রই পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে প্রকল্পটি দেখতে যাচ্ছি। ব্যাংকার আরও বলেন, তারা চাইলে বুকিং দেবেন।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া পুনর্বাসন মেলা চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের আয়োজনে মোট ২২০টি স্টল রয়েছে। সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। মেলায় দুই ধরনের টিকিট রয়েছে। একটি একক এন্ট্রি, অন্যটি একাধিক এন্ট্রি৷
একক প্রবেশ টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা। আর মাল্টিপল এন্ট্রি টিকিটের মূল্য ১০০ টাকা। একাধিক প্রবেশ টিকিট নিয়ে একজন দর্শনার্থী পাঁচবার মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশ টিকিট থেকে প্রাপ্ত পুরো অর্থ অভাবীদের সাহায্য করার জন্য ব্যয় করা হবে। প্রতিদিনই র্যা ফেল ড্র অনুষ্ঠিত হচ্ছে।