জুম্মার দিনে ও রাতে ইবাদত ও আমলের ফজিলত অনেক বেশি। এ দিনের ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে হাদিসে অনেক তথ্য রয়েছে। এ কারণে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু মানুষ নয়, বনের পশু-পাখিরাও আতঙ্কিত থাকে। একাধিক হাদীসের বর্ণনা থেকে জানা যায়-
হজরত আবু হুরায়হ (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শুক্রবার সূর্য উদিত হওয়ার শ্রেষ্ঠ দিন। এই দিনে আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করা হয়েছিল। এই দিনে তাকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। এ দিনে তার তওবা কবুল হয়। এই যে দিন তিনি ইন্তেকাল করেছেন এবং এটি কেয়ামতের দিন।
“মানুষ ও জ্বিন ব্যতীত প্রত্যেক প্রাণীই শুক্রবার ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেয়ামতকে ভয় পায়।”
এই দিনে একটি বিশেষ সময় রয়েছে, যখন একজন মুসলিম বান্দা সর্বশক্তিমান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যে কোনো প্রয়োজন পূরণের জন্য, এবং আল্লাহ তাকে তা দান করেন।
হজরত কাব (রা.) বলেন, এ সময় প্রতি বছর শুক্রবার হয়। আমি (আবু হুরায়রা) বললাম, না, তবে প্রতি শুক্রবার। অতঃপর কাব (এর প্রমাণে) তাওরাত পাঠ করলেন এবং বললেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য বলেছেন।
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু পরে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গে দেখা করেন এবং বিষয়টি তাঁকে অবহিত করেন। বর্ণনা করেন, তখন আমিও সেখানে উপস্থিত ছিলাম কাব রাদিয়াল্লাহু আনহু।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, দোয়া কবুলের বিশেষ সময়ের সম্পর্ক আমি জানি। তখন আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমাকে জানান। তখন তিনি বললেন-
“জুম্মার দিনের সর্বশেষ সময়।”
আমি (আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললাম, শুক্রবার শেষ ওয়াক্ত কি হবে? যাইহোক, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যে কোন মুসলমান সালাত আদায়ের সময় ঐ ওয়াক্ত পাবে…” কিন্তু আপনার বর্ণনাকৃত সময়ে নামায পড়া যাবে না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন:
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেননি যে, যে ব্যক্তি বসে সালাতের জন্য অপেক্ষা করবে সে সালাত আদায় না হওয়া পর্যন্ত নামায পড়া বলে গণ্য হবে?
(তখন) হযরত আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হ্যাঁ। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, এ রকম। ‘
তাহলে যেখানে বনের পশুরা জুমুআর সময়কে ভয় পায়, সেখানে একজন মুমিন মুসলমানের কী ধরনের ভয় থাকা উচিত? ইবাদতের কাজে মনোনিবেশ করা জরুরি।
বিশেষ করে শুক্রবারের আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় মসজিদে কাটানোর পর সঠিকভাবে হাদিস অনুসরণ করে নিজেদের ক্ষমা করানো এবং কাঙ্খিত চাহিদা পূরণের চেষ্টার কোনো বিকল্প নেই।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হাদীছের আলোকে জুমার আমল করার তাওফীক দান করুন। হাদিস মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমীন।